সমুদ্রের নিচে খুঁজে পাওয়া রহস্যময় 5 টি অদ্ভুত জিনিস।
মানুষের কৌতূহলের শেষ নেই, যার কারণে কিছু মানুষ জীবন কাটিয়ে দেয় বিভিন্ন রহস্য উদঘাটনের পিছনে। আর সে কারণেই মানুষ মহাকাশ, স্থল এমনকি সমুদ্রেও রহস্যের সন্ধান করে যাচ্ছে। আর তাই নিত্যনতুন আমাদের পৃথিবীর রহস্যগুলো আমাদের মানবজাতির সামনে চলে আসছে। হাজার হাজার বছর ধরে মানুষ সমুদ্রের নিচে গবেষণা করে যাচ্ছে। তারপরও সমুদ্রের মাত্র 5% জানতে পেরেছে আর বাকি 95% এখনো অজানা। আর এই পাঁচ শতাংশের মধ্যেই মানুষ যা খুঁজে পেয়েছে তা বিশ্ব বাসিকে ভাবিয়ে তোলে। আজকে আমার ব্লগের বিষয়টি হলো সমুদ্রের তলদেশে পাওয়া এমন কিছু আবিষ্কার যা দেখলে আপনি অবাক হবেন ।
13 হাজার বছর পুরনো মেয়ের মাথার খুলি |
প্রতিনিয়ত মানুষ সমুদ্র নিয়ে গবেষণা করে চলেছে। আর সমুদ্রের তলদেশে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জিনিস পাওয়া যায়। এমনকি সমুদ্রের অতল গভীরে মানুষের মাথার খুলিও পাওয়া যায়, তবে এটা নতুন নয়। কিন্তু অবাক করার তথ্য হলো মেক্সিকোর একদল গবেষক টিম বহু বছর আগে ডুবে যাওয়া একটি গুহার ভিতরে ঢুকে গবেষণা করে। এবং হঠাৎ করেই এই মাথার খুলি টি তারা দেখতে পায়। মাথার খুলি টি তারা গবেষণা করে দেখে এটির বয়স প্রায় 13 হাজার বছর। এটি একটি মেয়ের মাথার খুলি ছিল। আমেরিকাতে কিভাবে 13 হাজার বছর পূর্বের মেয়ে মানুষের মাথার খুলি পাওয়া যেতে পারে সেটা দেখে সবাই অবাক হয়ে যায়। এমনকি মাথার খুলি সাথে সাথে সেখানে আরো কিছু হাড্ডি দেখতে পাওয়া যায়, আর সেগুলো হাজার বছরের পুরোনো। আর এসব বৈজ্ঞানিকদের অবাক করে দিয়েছিল, তবে এগুলো গবেষণার কাজে দেয়।
2) সমুদ্র তলদেশের পিরামিড
সমুদ্র তলদেশের পিরামিড |
পিরামিডের কথা আসলেই আমাদের মাথায় মিশরের পিরামিডের চিত্র ভেসে ওঠে। এর কারণ পিরামিড বলতে আমরা মিশরের পিরামিড কে বুঝে থাকি। কিন্তু আপনারা জানলে অবাক হবেন শুধু স্থলেই নয় সমুদ্রের তলদেশেও পিরামিড রয়েছে । জাপানের রয়েছে এই পিরামিড, জাপানের ইয়াগনি সমুদ্র তলদেশে এই বিশাল আকারের পিরামিড এর অবস্থান। এটি দেখলে মনে হয় বিশাল আকারের বড় বড় পাথরের ব্লক দিয়ে একের পর এক সাজিয়ে তৈরি করা হয়েছে। অনেকেই বলে এগুলো মানুষের তৈরি, আর কেউ কেউ দাবি করে এগুলো প্রাকৃতিকভাবেই তৈরি হয়েছে। জাপানের সমুদ্র ভূবিজ্ঞানী মাসাকি কিমুরা দাবি করেন দুই হাজার বছরের পুরনো মানব সভ্যতার শহর এটি। যা দুই হাজার বছর পূর্বে কোন প্রাকৃতিক দুর্ঘটনায় সমুদ্রের নিচে ডুবে গিয়েছে। এই বিজ্ঞানী তার জীবনের 15 বছর এই পিরামিডের মানচিত্র আঁকতে এবং মাপ নিয়ে কাটিয়ে দিয়েছে। তবে এলিয়েনের তৈরি দাবি করেছে কেউ কেউ। কিন্তু এগুলো কীভাবে তৈরি হয়েছে তা নিয়ে আজও ধোঁয়াশা রয়েছে।
3) সমুদ্র তলদেশে বেঁধে রাখা ডুগং
জীব প্রেমীদের জন্য এটি একটি মর্মান্তিক ঘটনা। কিছু ডাইভার 2016 সালে ইন্দোনেশিয়ার কুকুয়া দ্বীপপুঞ্জের সমুদ্র সৈকতে ডাইভিং করার জন্য সমুদ্রের অতল গহব্বরে ডুব দেয়। তারা সমুদ্রের তলদেশের সৌন্দর্য উপভোগ করতে থাকে। এভাবে তারা সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে হঠাৎ করেই দেখতে পায় দুটি ডুগং । এবং ডুগং দুটি আলাদা আলাদা খাঁচায় বন্দী আছে। আর ডুগং দুটি ছিল মা আর ছেলে। মা ডুগং টির পেছনে শিকল দিয়ে বাঁধা থাকার কারণে পুরো লেজটি প্রায় পচে গিয়েছিল। স্থানীয় জেলেরা এটা করেছিল। এটা করার কারণ ছিল কোন পর্যটকরা আসলে টাকার বিনিময় ডুগং দুটিকে দেখতে দিতো। ডুগং হচ্ছে খুবই দুর্লভ সামুদ্রিক প্রাণী। আর এটা দেখে সেই ডাইভার এর দল ডুগং দুইটির কিছু ছবি তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে। এবং পোস্টগুলো মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়। পরবর্তীতে বন্য পশু অধিদপ্তর থেকে লোক এসে ডুগং দুটিকে মুক্ত করে দেয়। এবং ডুগং দুটি পরবর্তীতে সুস্থ হয়ে যায়।
4) সমুদ্র তলদেশে চেয়ারে বসা কঙ্কাল
4) সমুদ্র তলদেশে চেয়ারে বসা কঙ্কাল
একদিন এক স্কুবা ডাইভার অ্যারিজোনার কলোরাডো নদী তে ডুব দেয়। এবং সে নদীর একেবারে গভীরে চলে যায়। আর হঠাৎ করেই সে দেখতে পায় দুটি কঙ্কাল , কঙ্কাল দুটি চেয়ারের উপরে বসে আছে। শত শত বছরের পুরনো মনে হয় কঙ্কাল দুটিকে দেখতে। কিন্তু সে কঙ্কালের মাথায় চুল দেখে ঘাবড়ে যায়। এসব দেখে সে হতভম্ব হয়ে যায়। এরপর সে ওই নদী থেকে উঠে স্থানীয় পুলিশ দেরকে জানায়। এবং পরবর্তীতে পুলিশ একটি ফায়ার সার্ভিসের দল পাঠায়। আর গবেষণা করে জানা যায় এই কঙ্কাল দুটি আসল কঙ্কাল ছিলনা। কঙ্কাল দুটি ছিল প্লাস্টিকের তৈরি। বিভিন্ন সময়ে জীববিজ্ঞানীরা নদীর তলদেশে এরকমের বিভিন্ন কঙ্কাল রেখে দেয়। দুটো কারণ রয়েছে এরকম করার জন্য। অনেক সময় বিজ্ঞানীদের বিভিন্ন গবেষণার প্রয়োজন পড়ে। সেই সময় এই গুলো সমুদ্রের তলদেশে রেখে দেয়। যাতে করে স্কুবা ডাইভার এসব সংরক্ষিত স্থানে বেশি না আসে, সেজন্য তাদেরকে ভয় দেখানোর জন্য সমুদ্রের তলদেশে এগুলোকে রাখা হয়।
5) জায়েন্ট স্পাইডার
এক স্কুবা ডাইভার হঠাৎ একদিন আন্টার্টিকার বড় বরফিয় অঞ্চলের সমুদ্র তলদেশে ডুব দেয়। সে দেখতে পায় বিশাল আকৃতির এক মাকড়সা। যা দেখে স্কুবা ডাইভার অবাক হয়ে যায়, যে মাকড়সার কিভাবে এত বড় হতে পারে। গবেষণা করে পরবর্তীতে দেখা যায় ঠান্ডা পানিতে মাকড়সা এভাবে অদ্ভুতভাবে বড় হয়ে যায়। ঠান্ডা পানিতে অক্সিজেনের কারণে মাকড়সার আকৃতি বেড়ে যায় এটি প্রমাণ করার জন্য একদল গবেষক আন্টার্টিকার ঠান্ডা পানিতে মাকড়সা গুলোকে আবদ্ধ করে রেখে দেয়। এবং তারা কিছুদিন পর দেখতে পায় সেই ছোট মাকড়সা গুলো জায়েন্ট আকৃতিতে রূপ নিয়েছিল। আর সেই মাদরাসাগুলোকে সমুদ্রের মাকড়সা বলা হয়ে থাকে। আর এগুলোর আকৃতি প্রায় 25 থেকে 30 সেন্টিমিটার হয়ে থাকে।