রহস্যময় আটটি দ্বীপ।
দ্বীপ সাধারণত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত হয়ে থাকে। যে কারণে আমরা ছুটি কাটানোর জন্য বিভিন্ন দ্বীপে ঘুরতে যাই। কিন্তু সকল দ্বীপে যে সৌন্দর্যে ভরা থাকবে এমনটি কিন্তু নয়। পৃথিবীতে এমনও কিছু দ্বীপ আছে যেখানে যাওয়া মানেই মৃত্যু কে আমন্ত্রণ জানানো। আর কিছু আছে যেখানে মানুষ যেতে পারবে , তবে বেশিরভাগ দ্বীপই মানুষের জন্য বিপদজনক। যার কারণ হলো সেখানে থাকা ভয়ঙ্কর প্রাণীগুলোর রাজত্ব। তাহলে আজকে আমরা জানবো পৃথিবীতে থাকা বিখ্যাত আইল্যান্ড গুলোকে যেখানে ভিন্ন ভিন্ন প্রাণীরা রাজত্ব করে থাকে।
1) সাপেদের দ্বীপ
বিষধর সাপেদের বসবাস এই দ্বীপে। এই দ্বীপটি অবস্থিত আছে ব্রাজিলে। এখানে সাপের সংখ্যা এত বেশি যে প্রতি স্কয়ার মিটারে পাঁচটিরও বেশি সাপ দেখা যায়। এই দ্বীপে গোল্ডেন ল্যান্সহেড নামের এক প্রজাতির সাপ পাওয়া যায়। বিশ্বের সবচেয়ে বিষধর সাপের মধ্যে অন্যতম এই সাপ। আর এই সাপ কামড়ালে দশ থেকে পনেরো মিনিটের মধ্যে মানুষ মারা যায়। ব্রাজিলে সাপের কামড়ে মারা যাওয়া মানুষের মধ্যে 90% মানুষ মারা যায় এই সাপের কামড়ে। এবং বর্তমানে ব্রাজিলের নেভি এই দ্বীপে পর্যটক প্রবেশ এর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
2) বিড়ালদের দ্বীপ
বিড়ালদের দ্বীপ |
জাপানের মিয়াগী শহরে অবস্থিত এই বিড়ালের দ্বীপ। অবাক করা তথ্য হলো এখানে বিড়ালের সংখ্যা মানুষের থেকে কয়েক গুন বেশী। যে কারণে একে বিড়ালের দ্বীপ বলা হয়। জাপানের মধ্যযুগীয় সময়ে এখানে এই বিড়াদের আনা হয়েছিল। এখানে দিন দিন মানুষের বসতি কমে যাওয়ায় বিড়ালের বসতি বৃদ্ধি পেয়েছে। একারণেই এখানে আসলে চোখে পড়বে চারপাশে লাখ লাখ বিড়াল।
3) কাঁকড়াদের দ্বীপ
ভারত মহাসাগরে অবস্থিত রয়েছে এই দ্বীপ। এই দ্বীপের সমস্ত জায়গায় আপনার নজরে পড়বে লাল রঙের হাজার হাজার কাঁকড়া। আর এই লাল রঙের কাঁকড়া গুলোর কারণে এখানকার রাস্তাঘাট সব সময় লাল হয়ে থাকে। এই দ্বীপের জঙ্গলবাড়ি রেস্তোরাঁ সব জায়গাতেই কাঁকড়া দের দেখা পাওয়া যায়। সারা বছরই এই দ্বীপে প্রচুর কাঁকড়া দেখা যায়। তবে বছরের বিশেষ একটি সময়ে 12 কোটির বেশি কাকড়ার সমাগম হয়। কারণ সেই সময় এই কাঁকড়া দের দল প্রজনন করার জন্য দ্বীপের একপ্রান্ত থেকে শুরু করে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত ভারত মহাসাগরের তট পর্যন্ত যাত্রা করে। আর এই সময়টাতেই এখানকার বেশিরভাগ রাস্তার গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।
4) খরগোশদের দ্বীপ
পৃথিবীর মধ্যে অদ্ভুত এক দ্বীপ রয়েছে জাপানে। লক্ষ লক্ষ খরগোশ রাজত্ব করে থাকে এ দ্বীপটিতে। প্রতি বছর পর্যটকরা এই দ্বীপে বেড়াতে যায়। এবং এই খরগোশদের সাথে আনন্দ করে।
সেখানে বিভিন্ন জায়গায় থাকা খরগোশরা দৌড়ে আসে ও পর্যটকদের ঘিরে ধরে। প্রচলিত আছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপান 6000 টনেরও বেশি বিষাক্ত গ্যাস এই আইল্যান্ডে তৈরি করেছিল। যা পরবর্তীতে বিষাক্ত গ্যাস এর প্রভাব পরীক্ষা করার জন্য কয়েক হাজার খরগোশ ছাড়া হয়।এখন সেই খরগোশরা এই দ্বীপ টিতে রাজত্ব করছে।
5) কুমিরদের দ্বীপ
5) কুমিরদের দ্বীপ
কুমিরদের দ্বীপ |
বার্মার নিকটে অবস্থিত এই দ্বীপ। এখানের কুমিররা মানুষের এত বেশি ক্ষতি করেছে বা মেরে ফেলেছে যার কারনে এই দ্বীপটি গিনেজ বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ড করেছে। এই দ্বীপে নোনা জলের অনেক ঝিল রয়েছে। হাজার হাজার ভয়ঙ্কর কুমির রয়েছে সেই সব ঝিলে। এখানে 1000 জাপানি সৈন্য দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বসবাস করতে আসে । কিন্তু তাদের মধ্যে বেশিরভাগ সৈন্যই মারা যায় এই ভয়ঙ্কর কুমিরের আক্রমণে। আর বলা হয়ে থাকে এই আইল্যান্ড থেকে শুধুমাত্র 20 জন সৈন্যই ফিরতে পেরেছিল।
6) কমোডো ড্রাগনদের আইল্যান্ড
এই আইল্যান্ড ইন্দোনেশিয়ার নিকটবর্তী একটি সমুদ্র অবস্থিত। আর এই দ্বীপে বসবাস করছে কমোডো ড্রাগন নামের বিশাল আকারের হাজার-হাজার গিরগিটি। এবং এদেরই রাজত্ব চলছে এখানে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় একটি বিমান দুর্ঘটনার কবলে পড়ে এই দ্বীপের নিকটে এসে ভেঙে পড়ে। বিমানের পাইলট সাতরে এই দ্বীপে আসে। সেই বিমান পাইলট লক্ষ করে এই দ্বীপে বসবাস করছে হাজার হাজার কোমোডো ড্রাগন।
7) জংলি ঘোড়াদের দ্বীপ
7) জংলি ঘোড়াদের দ্বীপ
এই দ্বীপটি নভা স্কোটিয়া থেকে 100 মাইল দূরে অবস্থিত। জানা যায় এই দ্বীপ লাখ লাখ জংলি ঘোড়াদের আবাস স্থল । এবং 20 জুন 2013 সালে কানাডা সরকার এই দ্বীপকে ন্যাশনাল পার্ক হিসেবে ঘোষণা করে দেয়। এরপর থেকে বিশ্বের বিভিন্ন পর্যটকেরা ছুটি কাটানোর জন্য এবং পিকনিক স্পট হিসেবে পছন্দ করেছে।
8) ঝিনুকদের দ্বীপ
8) ঝিনুকদের দ্বীপ